ভিসা কার্ড কিভাবে করতে হয় | ভিসা কার্ড করতে কত টাকা লাগে ২০২৫
ভিসা কার্ড দিয়ে বিশ্বজুড়ে লেনদেন করুন নিরাপদে ও সুবিধাজনকভাবে। সবার মনে প্রশ্ন জাগে ভিসা কার্ড কিভাবে করবো? এজন্যই আজকের এই পোস্ট। ভিসা কার্ডের মাধ্যমে কেনাকাটা, বিল পেমেন্ট, এবং নগদ উত্তোলন করতে পারবেন দেশে ও বিদেশে।
আবেদন প্রক্রিয়া সহজ এবং দ্রুত, তাই আর দেরি না করে আজকের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। ভিসা কার্ড কিভাবে করতে হয় | ভিসা কার্ড করতে কত টাকা লাগে এই বিষয়ে আজকে আলোচনা করা হবে।
ভিসা কার্ড কি
ভিসা কার্ড হল একটি আন্তর্জাতিক পেমেন্ট কার্ড যা বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্যাংক দ্বারা প্রদান করা হয়। এটি গ্রাহকদের দেশে এবং বিদেশে লেনদেন, কেনাকাটা এবং নগদ উত্তোলনের সুবিধা দেয়।
ভিসা কার্ড পাওয়ার যোগ্যতা
আপনি যদি ভিসা কার্ড পেতে চান তাহলে বাংলাদেশ ব্যাংকগুলো কিছু নির্দিষ্ট শর্ত দিয়ে থাকে তা আপনাকে পূরণ করতে হবে। যা পূরণ করলে আপনি আন্তর্জাতিক পেমেন্ট সিস্টেমের সুবিধা নিতে পারবেন। তাহলে চলুন নিচে ভিসা কার্ড পাওয়ার প্রয়োজনীয় যোগ্যতা গুলো দেখে নেয়া যাক।
ভিসা কার্ড পাওয়ার যোগ্যতার জন্য ন্যূনতম বয়স
- ডেবিট কার্ডঃ ন্যূনতম ১৮ বছর বয়স
- ক্রেডিট কার্ডঃ ন্যূনতম ২১ বছর থেকে সর্বোচ্চ ৬০-৬৫ বছর (ব্যাংকভেদে ভিন্ন)

ভিসা কার্ড এর জন্য কি কি কাগজপত্র লাগবে
- জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি)/পাসপোর্টের ফটোকপি
- ৩-৬ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট
- বেতন সার্টিফিকেট/চালান (ব্যবসায়ীদের জন্য)
- টিন সার্টিফিকেট
- পাসপোর্ট সাইজের ছবি (২-৪ কপি)
আরও পড়ুন: রকেট একাউন্ট খোলার নিয়ম ২০২৫
ভিসা কার্ড পাওয়ার যোগ্যতায় ব্যাংকে স্থিতিশীল আর্থিক স্ট্যাটাস
- ক্রেডিট কার্ডের জন্য সিআইবি স্কোর ৬৫০+
- পূর্বে কোনো ঋণ না বাকি থাকা
- স্থায়ী চাকরি/ব্যবসা (ন্যূনতম ৬ মাস-১ বছর অভিজ্ঞতা)
ভিসা কার্ড পাওয়ার ক্ষেত্রে শর্তাবলী
- আন্তর্জাতিক কার্ডের জন্যঃ বৈধ পাসপোর্ট ও ভ্রমণের জন্য অনুমোদিত ডলার থাকা
- প্রিমিয়াম কার্ডের জন্যঃ উচ্চ আয়ের প্রমাণ ও এক্সক্লুসিভ ব্যাংকিং সম্পর্ক
- সেলফ-এমপ্লয়েডদের জন্যঃ ট্রেড লাইসেন্স/কোম্পানি ডকুমেন্ট
- নমিনির জাতীয় পরিচয়পত্র ও ছবি জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক
- বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে
- সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে সক্রিয় অ্যাকাউন্ট থাকা
- মোবাইল নম্বর ও ইমেইল আইডি রেজিস্ট্রেশন
ভিসা কার্ড কিভাবে বানাবো
ভিসা কার্ড আমাদের প্রত্যেকের জন্য অত্যন্ত জরুরী। কারণ এর মাধ্যমে দেশে-বিদেশে অনলাইনে লেনদেন ছাড়াও ইত্যাদি আরো অনেক কাজ করা যায়। তো ২০২৫ সালে এসে কিভাবে ভিসা কার্ড বানাবেন সেটি দেখে নিন।
ভিসা কার্ড এর জন্য কোন ব্যাংক নির্বাচন করবো
- ভিসা কার্ড ইস্যু করে এমন ব্যাংক নির্বাচন করুন (যেমনঃ ব্র্যাক ব্যাংক, ডাচ-বাংলা ব্যাংক, সিটি ব্যাংক)।
অনলাইন বা অফলাইনে আবেদন ফর্ম পূরণ
- ব্যাংকের ওয়েবসাইট বা মোবাইল অ্যাপে গিয়ে ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড বিভাগে আবেদন করুন।
- অথবা নিকটস্থ ব্যাংক শাখা থেকে আবেদন ফর্ম সংগ্রহ করে পূরণ করুন।
ভিসা কার্ড ইস্যুর জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা
- জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) বা পাসপোর্টের ফটোকপি।
- ৩-৬ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট (চাকুরিজীবীদের জন্য বেতন সার্টিফিকেট)।
- পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি (২-৪ কপি)।
- টিআইএন সার্টিফিকেট ও বর্তমান ঠিকানার প্রমাণপত্র (ইউটিলিটি বিল)।
ভিসা কার্ড প্রসেসিংয়ের জন্য নির্ধারিত আবেদন ফি
- কিছু ব্যাংকে কার্ড ইস্যুর জন্য ৫০০-৮০৫ টাকা ফি প্রযোজ্য (ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ক্ষেত্রে ৮০৫ টাকা)।
- আবেদন অনুমোদিত হলে ৭-১৫ কর্মদিবসের মধ্যে ব্যাংক শাখা বা নিবন্ধিত ঠিকানায় কার্ড পৌঁছে যায়।
ভিসা কার্ড এক্টিভেশন
- ব্যাংকের মোবাইল অ্যাপ (যেমনঃ BRAC Bank এর আস্থা অ্যাপ) বা কল সেন্টারে যোগাযোগ করে পিন সেট করুন।
ভিসা কার্ড করতে কত টাকা লাগে
ভিসা কার্ড ইস্যু করতে প্রয়োজনীয় খরচ ব্যাংক ও কার্ডের ধরনভেদে ভিন্ন হয়। বাংলাদেশের প্রধান ব্যাংকগুলোতে ভিসা ডেবিট, ক্রেডিট ও প্রিপেইড কার্ডের ফি কাঠামো নিচে উল্লেখ করা হলোঃ
আরও পড়ুনঃ ভিসা আবেদন করতে কি কি লাগে | ভিসা আবেদনের নিয়ম ২০২৫
ভিসা কার্ড ইস্যু ফি
- ডাচ-বাংলা ব্যাংকঃ ভিসা ডেবিট কার্ডের জন্য প্রথম বছরের ইস্যু ফি ৮০৫ টাকা (ভ্যাটসহ)।
- সিটি ব্যাংকঃ ভিসা প্লাটিনাম ক্রেডিট কার্ডের ইস্যু ফি ১,৫০০ টাকা।
- মিডল্যান্ড ব্যাংকঃ ভিসা ডেবিট কার্ডের বার্ষিক ফি ৫৭৫ টাকা (ভ্যাটসহ)।
- পূর্বালী ব্যাংকঃ পার্সোনালাইজড ডেবিট কার্ডের ইস্যু ফি ৩০০ টাকা + ১৫% ভ্যাট।
ভিসা কার্ডের বার্ষিক ফি
- ব্র্যাক ব্যাংকঃ টারা (মানে একটি নারী কেন্দ্রিক ব্যাংকিং পরিষেবা) ভিসা ডেবিট কার্ডের প্রথম বছর ফ্রি, দ্বিতীয় বছর থেকে ৩০০ টাকা।
- এইচএসবিসিঃ স্থানীয় ভিসা এটিএম কার্ডের বার্ষিক ফি ৩০০ টাকা।
- লংকাবাংলা ফাইন্যান্সঃ গোল্ড মাস্টারকার্ড/ভিসা কার্ডের নবায়ন ফি ২,০০০ টাকা + ভ্যাট।
ভিসা সাপ্লিমেন্টারি কার্ড ফি
- সিটি ব্যাংকঃ প্রথম সাপ্লিমেন্টারি কার্ড ফ্রি, দ্বিতীয়টির জন্য ৭৫০ টাকা।
- ইসলামী ব্যাংকঃ শরীয়াহ কম্প্লায়েন্ট কার্ডের সাপ্লিমেন্টারি ফি ৫০০ টাকা।
ভিসা কার্ড প্রতিস্থাপন ফি (রিপ্লেসমেন্ট)
- ডাচ-বাংলা ব্যাংকঃ হারানো বা ক্ষতিগ্রস্ত কার্ড প্রতিস্থাপনে ৫০০ টাকা।
- সোনালী ব্যাংকঃ ক্রেডিট কার্ড প্রতিস্থাপনের ফি ৬০০ টাকা।
ভিসা কার্ড লেনদেন ফি
- ক্রেডিট কার্ড ক্যাশ উত্তোলনঃ স্থানীয় এটিএম থেকে উত্তোলনে ২.৫% বা ২৫০ টাকা (যেটি বেশি)।
- বিদেশে লেনদেনঃ ৩% কারেন্সি মার্কআপ + অতিরিক্ত চার্জ।
ভিসা কার্ডের অন্যান্য চার্জ
- ই-কেওয়াইসি (e-KYC)ঃ ভার্চুয়াল কার্ডের জন্য ফ্রি।
- পিন পুনরায় ইস্যুঃ কল সেন্টারের মাধ্যমে ১০০ টাকা।
কোন ব্যাংকের ভিসা কার্ড ভালো
বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্যাংক গ্রাহকদের চাহিদা ও ব্যবহারের সুবিধা অনুযায়ী ভিসা কার্ড সরবরাহ করে। প্রতিটি কার্ডের সুবিধা, ফি কাঠামো এবং যোগ্যতা ব্যাংক ও কার্ডের ধরনভেদে ভিন্ন হয়।
আরও পড়ুনঃ পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে? পাসপোর্ট করার নিয়ম ২০২৫
ক্রেডিট কার্ড
ডাচ-বাংলা ব্যাংক (Nexus Visa Signature)
- সর্বোচ্চ ক্রেডিট লিমিট ২৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত
- ১,৩০০+ গ্লোবাল এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ অ্যাক্সেস ও প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার সুবিধা
- বার্ষিক ফি ২০,০০০ টাকা (প্রাথমিক কার্ড)

ব্র্যাক ব্যাংক (Visa Infinite)
- ৫,০০০ বোনাস রিওয়ার্ড পয়েন্ট ও বার্ষিক ৫,০০০ টাকা ক্যাশব্যাক
- ১২০,০০০ টাকা ন্যূনতম আয় (চাকুরিজীবী)
ইস্টার্ন ব্যাংক (EBL Visa Platinum)
- সর্বোচ্চ ১০ লক্ষ টাকা লিমিট ও ৪৫ দিনের সুদমুক্ত মেয়াদ
- এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ ও মিট-অ্যান্ড-গ্রিট সার্ভিস
ডেবিট কার্ড
ডাচ-বাংলা (VISA International Debit)
- বৈদেশিক মুদ্রা অ্যাকাউন্টের সাথে লিঙ্কযুক্ত (বার্ষিক ফি $১৭.২৫)
- শুধুমাত্র আন্তর্জাতিক লেনদেনের জন্য উপযোগী
ব্র্যাক ব্যাংক (Visa TARA Platinum)
- ন্যূনতম আয় ২০,০০০ টাকা ও ৮৭০ টাকা বার্ষিক ফি
প্রিপেইড কার্ড
যমুনা ব্যাংক (Visa Prepaid)
- ট্রাভেল কোটা অনুযায়ী ডুয়াল কারেন্সি লোডিং
- কোনো ক্রেডিট চেক বা ব্যাংক অ্যাকাউন্টের প্রয়োজন নেই
গুরুত্বপূর্ণ নোটিশঃ আপনি সিদ্ধান্ত গ্রহণের পূর্বে ব্যাংকের ওয়েবসাইটে হালনাগাদ ফি, সুবিধা ও শর্তাবলী যাচাই করুন।
ইসলামী ব্যাংক ভিসা কার্ড
ইসলামী ব্যাংকের ভিসা কার্ডগুলো শরীয়াহভিত্তিক ব্যাংকিং নীতিতে পরিচালিত হয়। ইসলামী ব্যাংক ৩ ধরনের ভিসা ডেবিট কার্ড অফার করে।
আরও পড়ুনঃ ১০ হাজার টাকার মধ্যে ভালো মোবাইল ২০২৫
ভিসা প্লাটিনাম ডেবিট কার্ড
- ইস্যু ফিঃ ৫০০ টাকা
- বার্ষিক রক্ষণাবেক্ষণ ফিঃ প্রতি ৬ মাসে ৪০০ টাকা
- দৈনিক এটিএম উত্তোলন সীমাঃ ২ লক্ষ টাকা
- পিওএস লেনদেন সীমাঃ ৩ লক্ষ টাকা
- বৈশিষ্ট্যঃ ডুয়েল কারেন্সি সুবিধা (টাকা ও ডলার)
ভিসা গোল্ড ডেবিট কার্ড
- ইস্যু ফিঃ নেই
- বার্ষিক রক্ষণাবেক্ষণ ফিঃ প্রতি ৬ মাসে ৩০০ টাকা
- দৈনিক এটিএম উত্তোলন সীমাঃ ১ লক্ষ টাকা
- বিশেষ সুবিধাঃ বিদেশে লেনদেনের জন্য পাসপোর্টে ডলার এন্ডোর্সমেন্ট প্রয়োজন
ভিসা ক্লাসিক ডেবিট কার্ড (স্টুডেন্ট)
- ইস্যু ফিঃ নেই
- রক্ষণাবেক্ষণ ফিঃ ফ্রি
- দৈনিক উত্তোলন সীমাঃ ৫০ হাজার টাকা
ইসলামী ব্যাংকে ভিসা কার্ড কিভাবে আবেদন করবেন
- ব্যাংক শাখায় আবেদন ফর্ম সংগ্রহ করুন।
- জাতীয় পরিচয়পত্র, ছবি ও ঠিকানার প্রমাণপত্র জমা দিন।
- ৭-১৫ কর্মদিবসের মধ্যে কার্ড সংগ্রহ করুন।
ডাচ বাংলা ব্যাংক ভিসা কার্ড
ডাচ-বাংলা ব্যাংক উচ্চ লিমিট এবং আন্তর্জাতিক সুবিধাসমৃদ্ধ ভিসা কার্ড প্রদান করে। কার্ডের প্রকারভেদ নিচে আলোচনা করা হলো।
ভিসা সিগনেচার ক্রেডিট কার্ড
- ক্রেডিট লিমিটঃ ৫ লক্ষ থেকে ২৫ লক্ষ টাকা
- বার্ষিক ফিঃ ২০,০০০ টাকা
- সুবিধাঃ ১,৩০০+ এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ অ্যাক্সেস, বিনামূল্যে হেলথ চেকআপ
ভিসা ইনস্ট্যান্ট ডেবিট কার্ড
- ইস্যু ফিঃ প্রথম বছর ফ্রি
- বার্ষিক ফিঃ ৪৬০ টাকা (ভ্যাটসহ)
- বৈশিষ্ট্যঃ অ্যাকাউন্ট খোলার সাথে সাথে কার্ড দেওয়া হয়
ভিসা ট্রাভেল প্রিপেইড কার্ড
- ইস্যু ফিঃ ৫০০ টাকা
- কারেন্সিঃ মাল্টিকারেন্সি (টাকা, ডলার, ইউরো)
- সুবিধাঃ পাসপোর্ট এন্ডোর্সমেন্ট ছাড়াই বিদেশে ব্যবহারযোগ্য
ডাচ বাংলা ব্যাংকে ভিসা কার্ড কিভাবে করবেন
- ব্যাংকের ওয়েবসাইট বা অ্যাপে গিয়ে “কার্ড” অপশন সিলেক্ট করুন।
- প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আপলোড করুন (এনআইডি, বেতন স্লিপ)।
- ৫-৭ কর্মদিবসের মধ্যে কার্ড পেয়ে যাবেন।
ডাচ বাংলা ব্যাংকে চার্জ ও শর্ত
- ক্রেডিট কার্ড ক্যাশ উত্তোলনে ৩% ফি
- বিদেশে লেনদেনে ২.৫% কারেন্সি মার্কআপ
- কার্ড হারানো হলে প্রতিস্থাপন ফি ৫০০ টাকা
ভিসা কার্ড এর সুবিধা কি
ভিসা কার্ড আধুনিক ব্যাংকিং ব্যবস্থার একটি অপরিহার্য অংশ হিসেবে দেশে-বিদেশে নিরাপদ ও সহজ লেনদেনের সুযোগ তৈরি করেছে। ভিসা কার্ডের প্রধান সুবিধাগুলো হলোঃ
- ২০০+ দেশে ভিসা কার্ড গ্রহণযোগ্য। বিদেশে এটিএম থেকে টাকা তোলা বা দোকানে পেমেন্ট করা যায়।
- ইএমভি চিপ, ওটিপি এবং বায়োমেট্রিক সিস্টেমের মাধ্যমে লেনদেন সুরক্ষিত থাকে।
- ভিসা প্লাটিনাম/সিগনেচার কার্ডে বিনামূল্যে এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ অ্যাক্সেস, ট্রাভেল ইন্স্যুরেন্স ও জরুরি চিকিৎসা সহায়তা পাওয়া যায়।
- প্রতি লেনদেনে পয়েন্ট জমা হয়, যা দিয়ে বিমান টিকেট বা শপিং ভাউচার কিনতে পারবেন।
- আমাজন, আলিবাবা বা স্থানীয় ই-কমার্স সাইটে সহজে পেমেন্ট করা যায়।
- কার্ড হারালে ২৪/৭ কল সেন্টারে ফোন করে তাৎক্ষণিক ব্লক করানো যায়।
- বিভিন্ন ধর্মীয় দিনে বা নববর্ষে অতিরিক্ত ডিসকাউন্ট ও ভাউচার পাওয়া যায়।
- মোবাইল বা কার্ড ট্যাপ করে সেকেন্ডে পেমেন্ট সম্পন্ন করা যায়।
ভিসা কার্ড দিয়ে টাকা তোলার নিয়ম
ভিসা কার্ডের মাধ্যমে টাকা তোলার পদ্ধতি সহজ, তবে ব্যাংক ও কার্ডের ধরনভেদে কিছু নিয়ম ও ফি প্রযোজ্য। ভিসা কার্ড দিয়ে টাকা তোলার নিয়ম গুলো হলোঃ
এটিএম বুথ থেকে উত্তোলন
- ভিসা-সাপোর্ট করা নিকটবর্তী যেকোনো এটিএম মেশিনে (যেমন: City Bank, Q-Cash বা NPSB নেটওয়ার্ক) আপনার কার্ড প্রবেশ করান।
- ধাপ ২ঃ পিন নম্বর দিয়ে লগ ইন করে “Cash Withdrawal” অপশন সিলেক্ট করুন।
- ধাপ ৩ঃ উত্তোলনের পরিমাণ লিখে কনফার্ম করুন (সর্বোচ্চ BDT 40,000 প্রতি ট্রানজেকশনে City Bank কার্ডে)।
ব্যাংক কাউন্টার থেকে উত্তোলন
- কার্ড ও জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে শাখায় যান।
- উত্তোলন ফরম পূরণ করে টাকা নিন (সর্বোচ্চ BDT ১,০০,০০০ দৈনিক Jamuna Bank কার্ডে)।
মোবাইল অ্যাপ/ইন্টারনেট ব্যাংকিং
- অ্যাপের ‘Fund Transfer’ অপশন থেকে City Bank কিংবা Jamuna Bank ব্যবহার করে নির্ধারিত অ্যাকাউন্টে টাকা স্থানান্তর করুন দ্রুত ও নিরাপদে।
ফ্রি ভিসা কার্ড কিভাবে পাবো
বিভিন্ন সরকারি তথ্য অথবা সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম থেকে জানা যায়, কিছু ব্যাংক ও প্ল্যাটফর্ম ফ্রি ভিসা কার্ড প্রদান করে থাকে।
ইসলামী ব্যাংক স্টুডেন্ট ভিসা কার্ড
শর্ত
- শিক্ষার্থীর বয়স ১৮-২৫ বছর।
- শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আইডি কার্ড ও ভর্তি কাগজ জমা দিতে হবে।
সুবিধা
- বার্ষিক ফি ফ্রি।
- দৈনিক BDT ৫০,০০০ পর্যন্ত উত্তোলন।
RedotPay ভার্চুয়াল ভিসা কার্ড
পদ্ধতি
- RedotPay অ্যাপটি ডাউনলোড করে রেফারেল কোড 7knqq ব্যবহার করলে আপনি বিশেষ সুবিধা পেতে পারেন।
- KYC ভেরিফিকেশন শেষে $৫ বোনাস পান।
- ভার্চুয়াল কার্ড জেনারেট করে অনলাইন পেমেন্ট করুন।
আরও পড়ুনঃ নতুন ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন ২০২৫ | ভোটার হতে কি কি লাগে
যমুনা ব্যাংক এর ভিসা ডেবিট কার্ড
- সেভিংস/কারেন্ট অ্যাকাউন্ট থাকলেই আবেদনযোগ্য।
- বার্ষিক ফি BDT ৪৩৪, তবে প্রথম বছর মাঝে মাঝে ফ্রি অফার থাকে।
FAQ
ভিসা কার্ড দিয়ে কী কী করা যায়?
ভিসা কার্ড দিয়ে দেশ-বিদেশে হোটেল, রেস্টুরেন্ট, শপিংমল, হাসপাতালে কেনাকাটা, বিল পরিশোধ, এটিএম থেকে টাকা উত্তোলন এবং বিকাশ একাউন্টে টাকা যোগ করা যায়।
ভিসা কার্ড পাওয়ার যোগ্য কে?
- বয়স ১৮ বছর বা তার বেশি হতে হবে
- নির্দিষ্ট মাসিক আয় থাকতে হবে
- ভালো ক্রেডিট ইতিহাস থাকতে হবে
- স্থিতিশীল কর্মজীবন থাকতে হবে
- সঠিক ডকুমেন্টেশন প্রদান করতে হবে
ভিসা কার্ডের বাৎসরিক চার্জ কত?
ভিসা কার্ডের বার্ষিক চার্জ ব্যাংক অনুসারে ভিন্ন। ক্লাসিক কার্ডের জন্য ৮০০-১,৫০০ টাকা, গোল্ড কার্ডের জন্য ১,০০০-২,০০০ টাকা, প্লাটিনাম/টাইটানিয়াম কার্ডের জন্য ১,০০০-১০,০০০ টাকা।
ভিসা কার্ডে কিভাবে টাকা রাখব?
ভিসা ডেবিট কার্ডে টাকা ব্যবহার করতে হলে আগে ব্যাংকে টাকা জমা দিতে হয়। ক্রেডিট কার্ডে খরচের টাকা ব্যাংকে যেভাবে বলে, সেভাবে দিয়ে দিতে হয়।
ভিসা কার্ড দিয়ে সর্বোচ্চ কত টাকা তোলা যায়?
ভিসা কার্ড দিয়ে প্রতিদিন সর্বোচ্চ ৫০,০০০ টাকা উত্তোলন করা যায়, তবে প্রতিবারে ২০,০০০ টাকা করে উত্তোলন করতে হবে।
ভিসা কার্ডের দৈনিক সীমা কত?
- ভিসা ক্লাসিক ডেবিট কার্ডঃ এটিএমে ৫০,০০০ টাকা, পিওএসে ২০০,০০০ টাকা
- ভিসা প্লাটিনাম/সিগনেচার ডেবিট কার্ডঃ এটিএমে ১০০,০০০ টাকা, পিওএসে ২৫০,০০০-৫০০,০০০ টাকা
ভিসা কার্ড দিয়ে কি টাকা তোলা যায়?
হ্যাঁ, ভিসা কার্ড দিয়ে যেকোনো এটিএম বুথ থেকে টাকা তোলা যায় যেখানে ভিসা চিহ্ন থাকে।
ভিসা কার্ড থেকে কত টাকা তোলা যায়?
ভিসা কার্ড থেকে দৈনিক সর্বোচ্চ ৫০,০০০ টাকা তোলা যায়, প্রতিবারে ২০,০০০ টাকা করে।
ভিসা নাকি মাস্টারকার্ড কোনটা ভালো?
উভয় কার্ডেরই নিজস্ব সুবিধা আছে। ভিসা ২০০+ দেশে গ্রহণযোগ্য, মাস্টারকার্ড ২১০+ দেশে। মাস্টারকার্ড সাধারণত বেশি ক্যাশব্যাক দেয়, আর ভিসা কম খরচে লেনদেনের জন্য জনপ্রিয়।
ভিসা কি মাস্টার কার্ডের চেয়ে বেশি খরচ করে?
না, সাধারণত ভিসা কার্ড কম খরচে লেনদেনের জন্য বেশি জনপ্রিয়। এটি মাস্টারকার্ডের তুলনায় কম খরচ করে।
মাস্টার কার্ড এর সুবিধা কি কি?
- ২১০টি দেশে গ্রহণযোগ্য
- অনলাইন কেনাকাটায় বেশি ক্যাশব্যাক দেয়
- সিকিউর কোড দিয়ে নিরাপত্তা প্রদান করে
- প্লাটিনাম বা উচ্চ শ্রেণীর কার্ডে ফ্রি লাউঞ্জ অ্যাকসেস, ভ্রমণ সুবিধা পাওয়া যায়
ভিসা না মাস্টার কার্ড নিরাপদ?
উভয় কার্ডই সমান নিরাপদ। ভিসা ‘ভিসা সিকিউর’ এবং মাস্টারকার্ড ‘মাস্টারকার্ড সিকিউর কোড’ প্রযুক্তি ব্যবহার করে। উভয়ই ওয়ানটাইম পাসওয়ার্ড ও এনক্রিপশন ব্যবহার করে গ্রাহকের তথ্য সুরক্ষিত রাখে।
ভিসা নাকি মাস্টারকার্ড কোন কার্ড বেশি ভালো?
উভয় কার্ডই জনপ্রিয়, তবে ব্যবহারের ধরন অনুযায়ী পছন্দ ভিন্ন। ভিসা কম খরচে লেনদেনের জন্য বেশি জনপ্রিয়, আর মাস্টারকার্ড ক্যাশব্যাক ও অফারের জন্য জনপ্রিয়।
ভিসা কার্ড কিভাবে করতে হয়, ভিসা কার্ড করতে কত টাকা লাগে – সম্পর্কিত কোন প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই আপনার মূল্যবান কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন।
আজকের পোস্টটি ভালো লাগলে অবশ্যই শেয়ার করতে ভুলবেন না। আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। পরবর্তী কোন পোস্টে ইনশাল্লাহ আবার কথা হবে। দোয়া রাখি সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন। আল্লাহ হাফেজ।