মোবাইলে ছবি এডিট করার সফটওয়্যার 2024 (সেরা ৭ টি)
আপনি কি মোবাইল দিয়ে ভালো মানের ছবি এডিট করতে চান কিন্তু কোন অ্যাপ বা সফটওয়্যার ব্যবহার করবেন তা নিয়ে বিভ্রান্ত? চিন্তার কিছু নেই আপনি একদম সঠিক জায়গায় এসেছেন।
এই পোস্টে আমি মোবাইল দিয়ে ছবি এডিট করার সেরা ৭ টি সফটওয়্যার সম্পর্কে আলোচনা করবো। এসব সফটওয়্যার ব্যবহার করে আপনি আপনার ছবিকে আরও সুন্দর, আকর্ষণীয় এবং প্রফেশনাল মানের করে তুলতে পারবেন।
আর সবচেয়ে ভালো দিক হলো এগুলো ব্যবহার করা খুবই সহজ। তাই ছবি এডিট করার কোনো অভিজ্ঞতা না থাকলেও আপনি সহজেই এই অ্যাপগুলো দিয়ে কাজ করতে পারবেন। দেরী না করে চলুন আমাদের আজকের আলোচনা শুরু করি।
মোবাইলে ছবি এডিট করার সফটওয়্যার 2024
১. Snapseed
বর্তমানে ছবি এডিট করার জন্য যে অ্যাপটি সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় তা হলো Snapseed। এটি একটি সহজ এবং শক্তিশালী এডিটিং টুল যা অনেকেই ব্যবহার করেন তাদের তোলা ছবি আরও সুন্দর করে তুলতে।
Snapseed এর মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই আপনার ছবির উজ্জ্বলতা, রং, কনট্রাস্ট এবং অন্যান্য বৈশিষ্ট্যগুলো পরিবর্তন করতে পারবেন যার ফলে ছবিটি আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে।
এই অ্যাপের বিশেষত্ব হলো এর সহজ ইন্টারফেস এবং বিভিন্ন উন্নত ফিচার যা ব্যবহারকারীদের তাদের ছবিকে প্রফেশনাল লুক দিতে সহায়তা করে।
২. Photo Director
ফটো এডিটিংয়ের জন্য Photo Director একটি চমৎকার অ্যাপ। বর্তমান সময়ে অনেকেই এই অ্যাপটি ব্যবহার করছেন। কারণ এটি ব্যবহার করা সহজ এবং এতে রয়েছে বেশ কিছু আকর্ষণীয় ফিল্টার।
এর ফিল্টারগুলো ব্যবহার করে আপনি আপনার ছবি খুব সহজেই আরও সুন্দর ও প্রফেশনাল করতে পারবেন।
এই অ্যাপটির সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো আপনি যদি একজন দক্ষ ফটোগ্রাফার না ও হন তবুও সামান্য কিছু এডিটিংয়ের মাধ্যমে সাধারণ ছবিকেও অসাধারণ করে তুলতে পারবেন।
আরও পড়ুন: ১০ হাজার টাকার মধ্যে ভালো মোবাইল 2024
ফটো ডিরেক্টর অ্যাপটি ব্যবহার করে আপনি ছবির রং, উজ্জ্বলতা বা কনট্রাস্ট সহ আরও অনেক কিছু পরিবর্তন করতে পারবেন। ছবির মান উন্নত করার জন্য অ্যাপটি দারুণ একটি মাধ্যম।
৩. Adobe Photoshop Express
ফটোশপ এক্সপ্রেস (Photoshop Express) হলো একটি জনপ্রিয় ছবি এডিটিং অ্যাপ যা অ্যাডোবি (Adobe) তৈরি করেছে। এটি ২০১৬ সালে প্রথম চালু হয় এবং এখন পর্যন্ত এটি অসংখ্য মানুষ ব্যবহার করে আসছে।
এই অ্যাপের সাহায্যে আপনি খুব সহজেই সাধারণ ছবি থেকে প্রফেশনাল ধরনের ছবি তৈরি করতে পারবেন। এতে অনেক ধরনের এডিটিং টুলস রয়েছে যা দিয়ে আপনি ছবির রং ঠিক করতে, কনট্রাস্ট বাড়াতে, বিভিন্ন ফিল্টার প্রয়োগ করতে এবং ছবিকে আরও আকর্ষণীয় করতে পারবেন।
ফটোশপ এক্সপ্রেস ব্যবহার করা খুব সহজ। তাই আপনি যদি ছবি এডিটিংয়ে নতুনও হন তবুও এটি ব্যবহার করে সহজেই চমৎকার ছবি তৈরি করতে পারবেন।
৪. AirBrush
AirBrush একটি চমৎকার অ্যাপ সেলফি প্রেমীদের জন্য। যারা সেলফি তুলতে ভালোবাসেন তাদের জন্য এটি এক অসাধারণ টুল। এই অ্যাপে আপনি পাবেন নানা ধরনের এডিটিং এবং বিউটিফিকেশন টুলস যা আপনার ছবিকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলবে।
সহজেই ছবি এডিট করে আপনি পেয়ে যাবেন প্রফেশনাল মানের ছবি।
এছাড়াও এখানে বিভিন্ন ফিল্টার রয়েছে যা ব্যবহার করে আপনি একদম অনন্য এবং সুন্দর ছবি তৈরি করতে পারবেন। যদি আপনি ইন্সটাগ্রামে ছবি পোস্ট করার জন্য প্রস্তুত ছবি তুলতে চান তবে এই অ্যাপটি আপনার জন্য সেরা।
কারণ এতে রয়েছে ক্লাসিক রিটাচ টুল, চুলের স্টাইল পরিবর্তনের অপশন এবং ভার্চুয়াল মেকআপ সিস্টেম যা ছবিকে আরও বেশি আকর্ষণীয় করে তোলে।
এই অ্যাপে কিছু বিশেষ ফিচারও আছে যার মধ্যে প্রিজম এবং রিলাইট অন্যতম। রিলাইট ফিচারের মাধ্যমে আপনি ছবির আলোর সেটিংস পরিবর্তন করতে পারবেন যা আপনার ছবিকে আরও নিখুঁত করে তুলবে।
৫. Instasize
ইন্সটাগ্রামে ছবি পোস্ট করতে গেলে অনেক সময় ছবির সাইজ অনুযায়ী তা কাটতে হয় যা অনেকের কাছে বিরক্তিকর। আপনি যদি এই ঝামেলা এড়াতে চান তাহলে Instasize অ্যাপটি আপনার জন্য হতে পারে আদর্শ।
এই অ্যাপের মাধ্যমে আপনি সহজেই আপনার ছবির সাইজ পরিবর্তন করতে পারবেন এবং কোনো অংশ না কেটে পুরো ছবি পোস্ট করতে পারবেন।
Instasize শুধু ছবি রিসাইজ করার কাজই করে না বরং এর সঙ্গে আরও অনেক ফিচার রয়েছে। এতে আপনি ফিল্টার ব্যবহার করে ছবি আরও সুন্দর করে তুলতে পারবেন। টেক্সট যুক্ত করার সুবিধা, বিউটিফিকেশন টুলস এবং কোলাজ তৈরির অপশনও রয়েছে।
এছাড়া ছবি এডিট করার জন্য কমন অ্যাডজাস্টমেন্ট এবং বেসিক ফ্রেমের মতো ফিচারও আছে যা আপনার ছবিকে এক নতুন মাত্রা দিতে সাহায্য করবে।
Instasize-এর অন্যতম বড় সুবিধা হলো এটি শুধু ছবি নয় ভিডিও এডিট করতেও আপনাকে সহায়তা করে। তাই আপনি যদি ভিডিওতে ফিল্টার বা টেক্সট যোগ করতে চান অথবা সাধারণ কোনো এডজাস্টমেন্ট করতে চান সেটিও করতে পারবেন।
৬. PICSART
PicsArt হলো একটি জনপ্রিয় ফটো এডিটিং এবং গ্রাফিক ডিজাইন সফটওয়্যার যা সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট এবং অন্যান্য ক্রিয়েটিভ কাজের জন্য ব্যবহার করা হয়।
এই সফটওয়্যারটি দিয়ে আপনি সহজেই বিভিন্ন ধরণের পোস্টার তৈরি করতে পারবেন, ছবি এডিট করতে পারবেন এবং আপনার কন্টেন্টকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে পারবেন।
আরও পড়ুন: আইফোনের ব্যাটারি হেলথ ভালো রাখার উপায়
PicsArt এর বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো এর উন্নত টুলসের সমৃদ্ধ কালেকশন যা অন্যান্য অনেক সফটওয়্যারে পাওয়া যায় না।
এখানে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের এডিটিং টুল যেমন কাটিং, ব্রাশিং, ফিল্টার অ্যাপ্লিকেশন, স্টিকার যোগ করা এবং টেক্সট যুক্ত করার সুবিধা। এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে আপনি আপনার ফটোতে প্রফেশনাল টাচ দিতে পারবেন এবং পোস্টার ডিজাইনে সৃজনশীলতা প্রকাশ করতে পারবেন।
আপনি যদি একটি ইউজার ফ্রেন্ডলি এবং কার্যকরী এডিটিং প্ল্যাটফর্ম খুঁজে থাকেন তাহলে PicsArt হতে পারে আপনার জন্য একটি চমৎকার সমাধান।
৭. INSHOT
INSHOT একটি জনপ্রিয় ফটো এবং ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার যা ব্যবহারকারীদের কাছে খুব দ্রুত জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এই সফটওয়্যারটি ফটো এডিটিং এর ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
INSHOT ব্যবহারকারীরা সহজেই বিভিন্ন প্রফেশনাল লুক দেওয়ার জন্য এতে থাকা বিভিন্ন ফিচার এবং টুলস ব্যবহার করতে পারেন। এটি শুধু ফটো নয় ভিডিও এডিটিং এর জন্যও ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
INSHOT এর অন্যতম আকর্ষণীয় একটি ফিচার হলো এতে Google Fonts ব্যবহার করা যায়। এর ফলে ব্যবহারকারীরা নিজেদের ফটো এবং পোস্টারগুলোতে স্টাইলিশ ফন্ট যোগ করার সুযোগ পায়।
বিশেষ করে যারা বাংলা ভাষায় পোস্টার বা ছবি এডিট করতে চান, তারা এই সফটওয়্যারটি ব্যবহার করে বাংলা স্টাইলিশ ফন্ট দিয়ে ছবি বা ভিডিওকে আরো আকর্ষণীয় করতে পারবেন।
৮. Adobe Lightroom
যারা ফটো এডিটিং করেন তারা Adobe Lightroom এর নাম শুনেছেন। এটি একদিকে যেমন প্রফেশনাল ফটো এডিটরদের কাছে জনপ্রিয় অন্যদিকে এর মোবাইল ভার্সনও অনেকেই ব্যবহার করেন।
Adobe Lightroom অ্যাপটি মোবাইল ফোনে ছবি এডিট করার জন্য অসাধারণ একটি টুল। বিশেষ করে ছবি রঙ বা কালার গ্রেডিং করার জন্য এটি খুবই কার্যকর।
এটি ব্যবহার করে আপনি খুব সহজেই আপনার ছবির মান উন্নত করতে পারবেন। আর যদি আপনার ফোনে RAW ফরম্যাটে ছবি তোলার সুবিধা থাকে তবে Lightroom অ্যাপের মাধ্যমে ছবিকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলা যায়।
আমাদের আজকের আলোচনা এই পর্যন্তই। এছাড়া আপনার কোন অ্যাপ সাজেশন থাকলে অথবা কোন প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট করুন।
ধন্যবাদ সবাইকে। আমাদের সাথে থাকার জন্য। কোনো প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট করে জানাবেন।